ফাইনালে আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকার শিরোপা ধরে রাখার শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে তারা। কানাডার স্বপ্নযাত্রা থামিয়ে অপেক্ষা এখন কেবল উৎসবের। যদিও এখনো বাকি শেষ পরীক্ষা। তবে চ্যাম্পিয়ন হবে তো বটেই, এককভাবে দখলে নিবে কোপার সর্বোচ্চ শিরোপার রেকর্ডও।
মেটলাইফ স্টেডিয়ামে বুধবার ভোরে কানাডার বিপক্ষে মাঠে নামে আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকার প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় তারা। যেখানে লিওনেল মেসি আর হুলিয়ান আলভারেজের গোলে ২-০ গোলের জয় পেয়েছে আলবিসেলেস্তারা। কানাডাকে বিদায় করে নিশ্চিত করেছে ফাইনাল।
আর্জেন্টিনায় খালি হাতে ফিরতে চান না এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। ইকুয়েডরের বিপক্ষে দুটি পেনাল্টি সেভ করে দলকে সেমিফাইনালে তুলে এমনটিই জানিয়েছিলেন ম্যাচের নায়ক। তার সেই স্বপ্ন পূরণের পথে আর মাত্র একটা কদমই বাকি।
দুই দলের শক্তির মাঝে যে বিস্তর ফারাক, তা ম্যাচের শুরুর ১০ মিনিটে বুঝাই যায়নি। বল পায়ে আধিপত্য আলবিসেলেস্তারা ধরে রাখলেও যেন ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল কানাডা। একটু এদিক-ওদিক হলেই হয়ে যেতে পারত বিপদ। বেশ ভালো দুটো সুযোগ হাতছাড়া করে তারা।
তনে এরপরেই ঘুরে দাঁড়ায় আর্জেন্টিনা। পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় তারা। প্রথমার্ধেই আটবার আক্রমণ চালায় প্রতিপক্ষের রক্ষণে। টানা আক্রমণে সফলতার মুখও দেখেছে তারা দ্রুতই। আসরে প্রথম গোলের দেখা পান আলভারেজ।
হুলিয়ান আলভারেজ জ্বলে উঠেছেন আসল সময়ে। সেমিফাইনালের প্রথম গোলটা আসে তার পায়ে। ম্যাচের ২৩তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল বাড়ান ডি পল। তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জালে জড়াতে ভুল করেননি ম্যানচেস্টার সিটির এই ফুটবলার।
এদিকে ডি মারিয়া আর লিওনেল মেসির রসায়নটাও বেশ জমে উঠে। কানাডার রক্ষণের কঠিণ পরীক্ষাই নিয়েছেন দু’জনে। প্রথমার্ধেই জালের দেখা পেতে পারতেন লিওনেল মেসি। তবে তার নেয়া শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে চলে যায় গোলবারের বাইরে।
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে গোলের দেখা প্রায় পেয়েই গিয়েছিল দলটি। কিন্তু জোনাথন ডেভিডের শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
প্রথমার্ধে গোলের খাতা খোলা না হলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দেখা মেলে মেসি ঝলক। আসরে প্রথমবারের মতো জালের দেখা পেলেন বিশ্বসেরা এই ফুটবলার। এঞ্জো ফার্নান্দেজের পাসে হালকা করে পা ছুঁইয়ে দিয়ে চলতি কোপায় নিজের প্রথম গোলটি আদায় করে নেন তিনি।
লম্বা সময় ধরে ছন্দে ছিলেন না মেসি। সাথে ছিল চোট সমস্যাও। ফলে চলতি কোপা আমেরিকাতে ছিলেন অনেকটাই নির্বিষ। তবে সেমিফাইনালে এসে ঘুরে দাঁড়ালেন তিনি। যেন ঘোষণা দিলেন আরো একবার শিরোপা জয়ের জন্যে তিনি প্রস্তুত।
এই গোলে দারুণ এক রেকর্ড গড়েছেন মেসি। ব্রাজিলের জিজিনিও–র পর কোপা আমেরিকার ইতিহাসে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ছয়টি আলাদা টুর্নামেন্টে গোল করলেন তিনি।
দুই গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পর ৬৮ মিনিটে আরও বাজে পরিস্থিতিতে পড়ে কানাডা। পায়ের চোটে মাঠ ছাড়েন কানাডা তারকা আলফোন্সো ডেভিস। তবুও চেষ্টা চালায় কানাডা। ৮৮তম মিনিটে ভালো সুযোগ পেয়েছিল তারা, তবে তানি ওলুওয়াসেই নেয়া শট দারুণভাবে সেভ করেন মার্টিনেজ।
আর কোনো গোল না হওয়ায় ২-০ গোলে কোপা আমেরিকার ফাইনাল নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা। সর্বশেষ আট আসরে এটি আলবিসেলেস্তেদের ষষ্ঠ ফাইনাল। আগামী সোমবার সকালে কলম্বিয়া-উরুগুয়ের ম্যাচের জয়ীদের বিপক্ষে শিরোপা জয়ের লড়াই নামবে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
Leave a Reply